ভাবসম্প্রসারণ: অর্থই অনর্থের মূল Orthoi Onorther Mul
ভাবসম্প্রসারণ: অর্থই অনর্থের মূল Orthoi Onorther Mul
আপনারা যারা শিক্ষার উপর বিভিন্ন তথ্য খুজতেছেন তাদের উদ্দেশ্যে বলছি তারা অবশ্যই আমাদের এই ওয়েবসাইট ভিজিট করুন। এখানে শিক্ষার উপর সমসাময়িক তথ্য প্রচার করা হয়ে থাকে। আমরা প্রতিদিনই কোন না কোন বিষয়ের উপর আলোচনা করে থাকি। আজ আমরা বাংলা দ্বিতীয় পত্রের ব্যাকরণ অংশের আরো একটি ভাব সম্প্রসারণ নিয়ে আলোচনা করব। আজকে যে ভাব সম্প্রসারণ চিনি আলোচনা করব সেটি অষ্টম, নবম ও দশম শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের জন্য উপযোগী একটি ভাব সম্প্রসারণ। আজকের ভাব-সম্প্রসারণটি নিম্নে আলোচনা করা হল:
ভাবসম্প্রসারণ তালিকা
- ভাবসম্প্রসারণ: শৈবাল দিঘিরে বলে উচ্চ করে শির, লিখে রেখো, এক ফোঁটা দিলেম শিশির
- ভাবসম্প্রসারণ: পুষ্প আপনার জন্য ফোটে না
- ভাবসম্প্রসারণ: শিক্ষাই জাতির মেরুদন্ড
- ভাবসম্প্রসারণ: ভোগে সুখ নাই, ত্যাগেই প্রকৃত সুখ
- ভাবসম্প্রসারণ: সৎ সঙ্গে স্বর্গবাস, অসৎ সঙ্গে সর্বনাশ / সঙ্গ দোষে লোহা ভাসে
- ভাবসম্প্রসারণ: প্রাণ থাকলেই প্রাণী হয়, কিন্তু মন না থাকলে মানুষ হয় না
- ভাবসম্প্রসারণ: আলস্য এক ভয়ানক ব্যাধি
- ভাবসম্প্রসারণ: জীবে প্রেম করে যেইজন সেইজন সেবিছে ঈশ্বর
- ভাবসম্প্রসারণ: বন্যেরা বনে সুন্দর, শিশুরা মাতৃক্রোড়ে
- ভাব সম্প্রসারণ: উদয়ের পথে শুনি কার বাণী, ভয় নাই ওরে ভয় নাই নিঃশেষে প্রাণ যে করিবে দান, ক্ষয় নাই তার ক্ষয় নাই
- ভাবসম্প্রসারণ: এ জগতে হায়, সে বেশি চায় আছে যার ভূরি ভুরি / রাজার হস্ত করে সমস্ত কাঙালের ধন চুরি
- ভাব সম্প্রসারণ: ভালোমন্দ, সুখ দুঃখ অন্ধকার আলো, মনে হয়, সব নিয়ে এ ধরণী ভাল
- ভাবসম্প্রসারণ: দশে মিলে করি কাজ, হারি জিতি নাহি লাজ
- ভাবসম্প্রসারণ: অসির চেয়ে মসি বড় / অসি অপেক্ষা মসি অধিকতর শক্তিমান
- ভাবসম্প্রসারণ: যে জাতি জীবন হারা অচল অসার / পদে পদে বাঁধে তারে জীর্ণ লোকাচার
- ভাবসম্প্রসারণ: ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র বালুকণা, বিন্দু বিন্দু জল গড়ে তোলে মহাদেশ সাগর অতল
অর্থই অনর্থের মূল
মূলভাব: মানুষ সৃষ্টির সেরা জীব। পার্থিব জীবনে মানুষকে বেঁচে থাকতে হলে অর্থের প্রয়োজন। বেঁচে থাকার জন্য মানব জীবনে অর্থ যেমন প্রয়োজন তেমনি অর্থের যথাযোগ্য সদ্ব্যবহার করা না হলে সে অর্থই অনর্থের কারণ হয়ে দাঁড়াবে। মানব জীবনের জন্য উপকারী অর্থ অপচয় এর মাধ্যমে ক্ষতির সৃষ্টি করে। অর্থের ক্ষতিকর দিক সম্পর্কে তাই বিশেষ সচেতনতা অবলম্বন করতে হবে।
সম্প্রসারিত ভাব: জীবনধারণের জন্য অর্থের প্রয়োজন অপরিহার্য। আজীবন মানুষের প্রয়োজন মেটায় অর্থ। অর্থ না থাকলে জীবনে দুঃখ কষ্টের শেষ থাকে না। জীবন তখন অর্থহীন বা মূল্যহীন বিবেচিত হয়। তাই সারা জীবন মানুষ অর্থের পিছনে ছুটে। অর্থ বা সম্পদের মোহে মানুষ জীবন সংগ্রামে লিপ্ত হয়। মানুষ তার কাঙ্খিত অর্থ উপার্জনের জন্য কঠোর পরিশ্রম করে এবং নানা প্রতিকূল অবস্থার মোকাবেলা করে।
তাই কি করে বেশি অর্থ উপার্জন করা যায় তার জন্য মানুষের চেষ্টার কোন শেষ নেই। একজন ধনবান ব্যক্তি চাই কিভাবে তার আরও বেশি অর্থ উপার্জন করা যায়। সে শুধুই অর্থের পেছনে ছুটে। কারণ বিপদে-আপদে, উৎসবে – আনন্দে, জন্ম – মৃত্যুতে জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রেই অর্থের প্রয়োজন। অর্থ ছাড়া জীবন মূল্যহীন। জীবনের সুখ-শান্তি এবং ভালোভাবে বেঁচে থাকতে হলে অর্থের প্রয়োজন অর্থই মানুষের জীবনকে চাঙ্গা করে তোলে।
আবার এই অর্থই মানুষকে ধ্বংসের দিকে নিয়ে যায়। অর্থ ও সম্পদ অনেক সময় সুখ ও কল্যাণের বদলে অকল্যাণ বয়ে আনে। কথায় আছে- অর্থই জীবন অর্থই মৃত্যু। এই অর্থের কারণেই মানব জীবনে অনেক ক্ষতির সাধন হয়ে থাকে। অর্থের লালসা মানুষের নৈতিক অধঃপতন ঘটায়। অর্থের লোভেই চরিত্রহীন হয়ে মানুষ সমাজ বিরোধী কাজে লিপ্ত হয়। অর্থের লোভে মানুষ মানুষকে খুন করে, মানুষ নৈতিকতা বিসর্জন দেয়, মানুষকে ভুল পথে পরিচালিত করে এই অর্থই।
অর্থের লালসায় মানুষ অনেক সময় ভুল পথে পরিচালিত হয়। মানুষ অন্যায় কাজে লিপ্ত হয়। টাকার জোরে কখনো অন্যায়-অপরাধ চাপা দেওয়ার চেষ্টা চলে। অর্থের প্রলোভনে অনেক অন্যায় করা যায়। তাই দেখা যায় সামাজিক অন্যায়-অনাচার বিরোধের পেছনে অর্থ কাজ করে। এভাবে অর্থ অনর্থ ঘটায়। বর্তমানে যে সাম্প্রতিক ঘটনা ঘটছে সেটা বিশ্লেষণ করলে দেখা যায় তার পেছনে রয়েছে অর্থ। কারণ বিত্তশালী ব্যক্তিরা এই অর্থের কারণে অনেক অপরাধ অন্যায় কাজ করেও তা ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করে। আইনের চোখে তারা ফাঁকি দিয়ে চলে। এই অর্থের কারণে অনেক গরিব দরিদ্র ব্যক্তিরা ন্যায় বিচার পায় না। আবার এই অর্থই অনেকে অন্যায় কাজ করে থাকলেও তাদেরকে রেহাই দেয় মুক্তিলাভ করিয়ে দেয়।
মন্তব্য: আমাদের সুস্থ সমাজ জীবন ও স্বাভাবিক জীবন অতিবাহিত করার জন্য অর্থের প্রয়োজন। কিন্তু খেয়াল রাখতে হবে অর্থ যেন অনর্থের মূল না হয়। মনে রাখতে হবে অর্থের সুষ্ঠু ব্যবহারের মর্যাদা বৃদ্ধি করে। কথায় আছে অতিরিক্ত কোন কিছুই ভালো না। সকল অনর্থের মূল হিসেবে বিবেচিত এই অর্থ – সম্পদের ব্যবহার সম্পর্কে সচেতন থাকতে হবে। আমাদের সবাইকে অর্থের সুষ্ঠু ব্যবহার করতে হবে তাহলেই দেশ ও জাতি সামনের দিকে এগিয়ে যাবে।
পরিশেষে সকলকে ধন্যবাদ জানাই। আশা করি আজ যে ভাবসম্প্রসারণ নিয়ে আলোচনা করা হলো। তা বিভিন্ন শ্রেণীর ছাত্র-ছাত্রীদের অবশ্যই কাজে লাগবে। আপনারা বেশি বেশি করে এই ওয়েবসাইট ভিজিট করবেন শুধু যে এই ওয়েবসাইটের মাধ্যমে আপনার ভাব সম্প্রসারণ গুলো পাবেন তা না আপনারা আপনাদের পাঠ্যপুস্তকগুলোও এর সাথে ব্যবহার করবেন তাহলে আরো ভালোভাবে অনেক কিছু শিখতে পারবেন।