মহানবী (সাঃ) জীবনী – মাক্কী জীবন – শিক্ষণীয় বিষয়সমূহ-৩

One Time School

Updated on:


(১) আল্লাহ অনেক সময় শক্তিশালী অন্য কোন ব্যক্তিকে সত্যসেবীদের সহায়তার জন্য দাঁড় করিয়ে দেন। হাবশার খ্রিষ্টান বাদশা তার বাস্তব প্রমাণ।

(২) কুরআন যে নিঃসন্দেহে আল্লাহর কালাম এবং তার শব্দশৈলী ও ভাষালংকার যে অবিশ্বাসীদের হৃদয়কেও ছিন্ন করে, কা‘বা চত্বরে সূরা নাজম পাঠ শেষে রাসূল (সাঃ)-এর সাথে সাথে কাফেরদের সিজদায় পড়ে যাওয়া তার অন্যতম প্রমাণ।

(৩) মৃত্যুভয় উপেক্ষা করে কুরআনী সত্য প্রকাশ করায় যে আল্লাহর রহমত নেমে আসে, নাজাশীর সম্মুখে জাফর বিন আবু তালিবের ঈসা (আঃ) সম্পর্কিত সত্যভাষণ তার জাজ্বল্যমান প্রমাণ বহন করে।

(৪) রাজনৈতিক সুবিধাভোগী ও দরবারী আলেমরা যে ঘুষখোর ও দুনিয়াপূজারী হয়, নাজাশী দরবারের পোপ-পাদ্রীরা তার অন্যতম উদাহরণ।

(৫) মিথ্যাচার যে অবশেষে ব্যর্থ হয়, কুরায়েশ দূত আমর ইবনুল ‘আছের কূটনীতির ব্যর্থতা তার বাস্তব প্রমাণ।

(৬) দুনিয়াপূজারী নেতারা নির্লোভ সংস্কারকদের নিজেদের মত করে ভাবতে চায়। তারা একে ক্ষমতা ও নেতৃত্ব হাছিলের আন্দোলন বলে ধারণা করে। যেমন তারা রাসূল (সাঃ)-এর দাওয়াত সম্পর্কে মন্তব্য করেছিল- ‘নিশ্চয়ই মুহাম্মাদের এ দাওয়াত বিশেষ কোন উদ্দেশ্য প্রণোদিত’ (ছোয়াদ ৩৮/৬)। আর সেকারণ তারা লোভনীয় প্রস্তাব সমূহের ডালি নিয়ে সংস্কারকের সম্মুখে হাযির হয়। যাতে তার ফাঁদে পড়ে সংস্কার কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায় অথবা তাতে ভাটা পড়ে। শেষনবী মুহাম্মাদ (সাঃ)-এর জীবনে যেমনটি ঘটেছে, তাঁর সনিষ্ঠ অনুসারী সংস্কারকদের জীবনেও যুগে যুগে তেমনটি ঘটবে এবং এটাই স্বাভাবিক।

(৭) বাতিলপন্থী নেতারা হক-এর দাওয়াতের যথার্থতা স্বীকার করে। তারা কুরআনকে সত্য কিতাব হিসাবে মানে। কিন্তু দুনিয়াবী স্বার্থ তাদেরকে অন্ধ করে রাখে। যেমন বিশেষভাবে ওৎবা বিন রাবী‘আহ্র ক্ষেত্রে দেখা গেছে।

(৮) কায়েমী স্বার্থবাদী নেতারা সংস্কারকের বিরুদ্ধে প্রধানতঃ ২টি অভিযোগ দাঁড় করিয়ে থাকে। এক- পিতৃধর্ম ও রেওয়াজের বিরোধিতা এবং দুই- সমাজে বিভক্তি সৃষ্টি করা। যেমন কুরায়েশ নেতারা এসে আবু তালেবের নিকটে রাসূল (সাঃ)-এর বিরুদ্ধে উক্ত অভিযোগগুলি করেছিল।

(৯) নির্ভেজাল তাওহীদ বিশ্বাসের মাধ্যমে দুনিয়া জয় করা সম্ভব, তার ভবিষ্যদ্বাণী উচ্চারিত হয়েছিল রাসূল (সাঃ)-এর পবিত্র যবানে আবু জাহলদের সম্মুখে ১০ম নববী বর্ষের মাঝামাঝি সময়ে এবং তার সফল বাস্তবায়ন ঘটেছিল তার ১১ বছর পরে ৮ম হিজরীর ১৭ই রামাযান মক্কা বিজয়ের মাধ্যমে। অতঃপর খলীফাদের যুগে আরব-আজমের সর্বত্র ইসলামী খেলাফতের একচ্ছত্র বিজয় সাধনের মাধ্যমে।

(১০) তাওহীদের কালেমা চির বিজয়ী শক্তি। যা কখনোই পরাজিত হয় না। প্রয়োজন কেবল দক্ষ ও সাহসী নেতা এবং আনুগত্যশীল সাহসী অনুসারী দল।

Leave a Comment

error: Don't Copy This Content !!